সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুমৃত্যু বেড়েছে , নারীমৃত্যু কমেছে : এসসিআরএফ

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় পরবর্তী তিন মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নারী মৃত্যুর হার ৮.৫৩ শতাংশ কমেছে। একই সময়ে শিশুমৃত্যুর হার বেড়েছে প্রায় ১৭ (১৬.৬৬) শতাংশ। অন্যদিকে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৫.১২ শতাংশ বাড়লেও প্রাণহানির হার ১২.০৮ শতাংশ কমেছে। সব মিলিয়ে গত তিন মাসে নিহত ও আহতের হার পূর্ববর্তী তিন মাসের তুলনায় যথাক্রমে ৪.৭১ ও ২০.০৬ শতাংশ কমেছে।

শুক্রবার  শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। সড়ক দুর্ঘটনার ওপর ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ৬ মাস পর্যবেক্ষণ চালিয়ে ও তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ১২টি বাংলা জাতীয় দৈনিক, ৫টি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক, ৯টি অনলাইন নিউজপোর্টাল ও সংবাদ সংস্থা এবং ৬টি আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ছয় মাসে সারা দেশে ২ হাজার ৭৮১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৮৯৮ জন নিহত ও ৪ হাজার ৭২০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রথম তিন মাসে ১ হাজার ৩০২ দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৪৮৪ জন নিহত ও ২ হাজার ৪৮৫ জন আহত হন। পরবর্তী তিন মাসে ১ হাজার ৪৭৯ দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত হন ১ হাজার ৪১৪ জন ও ২ হাজার ২৩৫ জন। ছয় মাসে ৪০৪ জন নারী ও ৪৫৫ শিশুর প্রাণহানি ঘটেছে। এতে দেখা যায়, নারী ও শিশুমৃত্যুর হার যথাক্রমে ১৩.৯৪ ও ১৫.৭ শতাংশ। এর মধ্যে প্রথম তিন মাসে ২১১ ও পরবর্তী তিন মাসে ১৯৩ জন নারী সড়কে নিহত হয়েছেন। এ হিসাবে নারীমৃত্যুর হার ৮.৫৩ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া প্রথম তিন মাসে ২১০ শিশুর প্রাণহানি ঘটলেও পরবর্তী তিন মাসে নিহত হয়েছে ২৪৫ শিশু। পর্যালোচনায় দেখা যায়, শিশুমৃত্যুর হার ১৬.৬৬ শতাংশ বেড়েছে।

অন্যদিকে, ছয় মাসে ১ হাজার ৭৯ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৮৮ জন, যা মোট দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ৩৮.৭৯ ও ৩৭.৫৪ শতাংশ। প্রথম তিন মাসের তুলনায় গত তিন মাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৫.১২ শতাংশ বাড়লেও প্রাণহানির হার ১২.০৮ শতাংশ কমেছে। সড়ক দুর্ঘটনায় ছয় মাসে ৩৭৭ জন পথচারী নিহত হয়েছেন; যা মোট দুর্ঘটনার ২৩.৩৬ শতাংশ। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত নিহত হন ৩৭০ জন এবং এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে নিহত হন ৩০৭ জন।

দুর্ঘটনার ১৬ কারণ : পর্যবেক্ষণে সড়ক দুর্ঘটনার ১৬টি কারণ চিহ্নিত করেছে এসসিআরএফ। এর মধ্যে রয়েছে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, অদক্ষ ও অসুস্থ চালক, গাড়ির বেপরোয়া গতি, নিয়োগপত্র, সাপ্তাহিক ছুটি এবং কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকায় চালক ও সহকারীদের মানসিক অবসন্নতা, জাতীয় মহাসড়ক ও আন্তঃজেলা সড়কে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক, বিআরটিএর অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনিয়ম-দুর্নীতি, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, মানুষের সচেতনতার ঘাটতি ও ট্রাফিক আইন সম্পর্কে ধারণা না থাকা, চালক ও পথচারীদের ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা।